দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শুধু অর্থনীতিতেই নয় বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেও প্রবাসীরা দেশের বেকারত্ব দূর করতে অবদান রাখছে। সেইসঙ্গে তাঁদের
পাঠানো অর্থে রেমিট্যান্সের গতিও ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) অর্থনৈতিক শুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিবিএসের প্রতিবেদনে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। এর মধ্যে ৯০ হাজার ৪৩৩টি প্রতিষ্ঠানে প্রবাসীরা বিনিয়োগ করছে। এর মধ্যে পাঁচ লাখ টাকার উপরে বিনিয়োগ রয়েছে এমন
প্রতিষ্ঠান ৫৫ হাজার ৮৯৩টি। এক লাখ টাকার উপরে বিনিয়োগ করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৬ হাজার ৪৭৫টি এবং ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০ হাজার ৯৪২টি। প্রবাসী বিনিয়োগে সর্বাধিক ২৮ হাজার
৯৪৩টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। আর বরিশাল বিভাগ সর্বনিন্ম দুই হাজার ৯৮৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০১ ও ৩ সালে প্রবাসীদের বিনিয়োগের এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিলো মাত্র ৩৪ হাজার ৩৪০টি।
অর্থনৈতিক শুমারির প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ১০ বছরে দেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। পোল্ট্রি ফার্ম, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোকান ও বাড়িঘর নিমার্ণ থেকে শুরু করে নানা কাজে বিনিয়োগ করছেন
প্রবাসীরা। প্রবাসীদের টাকায় নির্মিত একটা বাড়িও বিনিয়োগের মধ্যে পড়ে। কারণ এটা মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) হিসাব করা হয়। তাছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে সঠিক ও নির্ভুল পরিসংখ্যান। অর্থনৈতিক শুমারির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক চিত্র তুলে ধরে। এই শুমারির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত দেশের ভবিষ্যত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সাল থেকে এ পযন্ত সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের পাশাপাশি ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটি শ্রমিক চাকরি নিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি গেছেন সৌদি আরবে, প্রায় ২৬ লাখ ৭৭ হাজার ৪৩৬ জন। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইরাক, লেবানন ও জর্ডনেও বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় কাজ নিয়ে গেছেন। আফ্রিকার লিবিয়া, সুদান, মিসর ও মরিশাস, ইউরোপের যুক্তরাজ্যে ও ইতালি এবং এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও ব্রুনাইয়েও রয়েছেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা।