বোর্ডিং ব্রিজ পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত অপারেটর না থাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দিনে প্রায় ১৩০টি ফ্লাইট ওঠানামা করে এ বিমানবন্দরে। বর্তমানে শাহজালালে বোর্ডিং ব্রিজ আছে ৮টি আর এসব বোর্ডিং ব্রিজ পরিচালনার অপারেটর আছে মাত্র ১৪ জন। নতুন অর্গানোগ্রাম অনুমোদন হলে এ সংকট দ্রুত কাটবে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজ রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৮টি, সিলেটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১টি, চট্টগ্রামে রয়েছে ২টি বোর্ডিং ব্রিজ রয়েছে। এসব বোর্ডিং ব্রিজ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত পদ রয়েছে ৩৬টি। তবে এসব পদের বিপরীতে লোকবল রয়েছে মাত্র ১৭ জন। এরমধ্যে ২ জন চট্টগ্রামে, ১ জন সিলেটে, বাকি ১৪জন ঢাকায়। এই জনবল দিয়ে দিনে ৩টি শিফটে বোর্ডিং ব্রিজ পরিচালনা করতে হয়।
বিভিন্ন এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দরের চাহিদার তুলনায় ৮টি বোর্ডিং ব্রিজ পর্যাপ্ত নয়। প্রায় একই সময়ে ৮টি বেশি ফ্লাইট অপারেশনে থাকলে বে-এরিয়ায় যাত্রী ওঠানামা করাতে হয় এয়ারলাইন্সগুলোকে। এদিকে ঈদের সময়ে বোর্ডিং ব্রিজ অপারেটরের সংকটে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও এয়ারলাইন্সগুলোকে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সংস্থাটির আগস্ট মাসের মাসিক সমন্বয় সভায় বোর্ডিং ব্রিজ অপারেটর সংকটের বিষয়ে আলোচনা হয়। গত ৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত সভার সভাপতিত্ব করেন বেবিচকের চেয়ারম্যান এম নাইম হাসান। সভায় জানানো হয়, শাহজালালে বোর্ডিং ব্রিজ পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত অপারেটর না থাকায় বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে অসুবিধা হচ্ছে। সাময়িকভাবে অন্য ট্রেড থেকে লোক এনে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। শাহ আমানত ও ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রয়োজনীয় জনবল তৈরি করা হয়েছে। এরফলে সেখানে ২টি বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজ অপারেটরের প্রয়োজন নেই। তাদের শাহজালালে বদলি করতে পরিচালন প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে শাহজালালে দিনে ৪০ থেকে ৫০টি ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বোর্ডিং ব্রিজ প্রসঙ্গে এয়ারলাইন্সটির মহা-ব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বোর্ডিং ব্রিজ না পাওয়া গেলে আমাদের বাড়তি চাপে থাকতে হয়। যাত্রীদের বে-এরিয়ায় নামিয়ে কো-বাসে টার্মিনালে আনাতে হয়। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় ব্যাগেজ সরবরাহ করতে। এতে অনেক বেশি সময় ব্যয় হয়। এছাড়া, বোর্ডিং ব্রিজ ছাড়া বে-এলাকায় যাত্রী ওঠানামা করাতে গেলে মশা-মাছির উপদ্রবের আশঙ্কাও থাকে।’
দ্রুত জনবলের অনুমোদন পাওয়া গেলে এ সংকট কাটানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পুরনো জনবল দিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে। নতুন অর্গানোগ্রাম অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তখন এ সংকট কাটানো সম্ভব হবে। আশা করি, দ্রুত সমাধান হবে।
– বাংলা ট্রিবিউন