ইলেক্ট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক জোরদার হয়েছে। অনেক দেশেই এই মেশিনটির মাধ্যমে ভোট গ্রহণের ওপর অসংখ্য অভিযোগের ভিত্তিতে অনাস্থা বাড়ছে। ২০১৪ সালে ভারতের সাধারণ নির্বাচনে ব্যবহৃত এই মেশিনগুলো হ্যাকের শিকার হয়েছিলো বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এনডিটিভি
সোবমার লন্ডনে ভারতের নির্বাচনগুলোতে ইভিএমের মাধ্যমে জালিয়াতির প্রতিবাদে সরাসরি প্রচারে একটি সভার আয়োজন করে ভারতীয় ও বিদেশী সাংবাদিকরা। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্কাইপের মাধ্যমে ভিডিও কলে সাক্ষাৎকার দেন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা ভারতীয় বংশোদ্ভুত সাইয়েদ সুজা।
প্রাণনাশের আশঙ্কায় তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে পারেননি। এর আগেও একবার লন্ডনে তিনি হামলার শিকার হয়েছিলেন বলে সুজা অভিযোগ করেছেন।
সামরিক বাহিনীর একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে ইভিএম মেশিনগুলো হ্যাক করা হয়েছিলো এমনকি ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস জয় পাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো এমন প্রায় ২শ টি আসনেও ভোট জালিয়াতি করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি’র (বিজেপি) পক্ষে ইভিএম হ্যাক করে ভোট জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সাইবার বিশেষজ্ঞ সুজার ওপর প্রাণনাশের হুমকি আসলে ২০১৪ সালেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান বলে তিনি জানান।
জ্যেষ্ঠ বিজেপি নেতা ও দেশটির সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গোপিনাথ মুন্ডে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারে আশানুরুপ মযার্দা না পাওয়ায় ইভিএম হ্যাকের বিষয়টি ফাঁস করে দিতে চাওয়ায় হত্যার শিকার হয়েছেন। সাংবাদিক গৌরি লঙ্কেশকেও একই কারণে হত্যা করা হয়েছে বলে সুজা অভিযোগ করেছেন।
ভারতের গত সাধারণ নির্বাচনে ইভিএম হ্যাকের অভিযোগটি বিজেপির ওপর হলেও এ কাজের জন্য কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, সমাজবাদি পার্টিসহ অন্যান্য আঞ্চলিক বিরোধী দলগুলো তার সহযোগিতা চেয়েছিলো বলে সুজা জানান।
দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিআই) এই হ্যাকের সঙ্গে শতাভাগ জড়িত এবং গত বছরের মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানার প্রাদেশিক নির্বাচনেও হ্যাকের ঘটনা ঘটেছে। তবে ২০১৫ সালে দিল্লির পার্লামেন্ট নির্বাচনে হ্যাক ঠেকানো হয়েছে যেখানে আম আদমি পার্টি ভূমিধস বিজয় পেয়েছে বলে সুজা জানান।
সুজার বক্তব্যের ওপর ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য পাওয়া না গেলেও হ্যাকের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে ইসিআই।