গত ২০১৬ সালের মে মাসে মারা গেছেন ঢাকার চকবাজার থানা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল আজিজুল্লাহ। কিন্তু মৃত্যুর ২৮ মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর এক ককটেল হামলার মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ওই বিস্ফোরক মামলার আরেক আসামি চাঁন মিয়া ঘটনার সময় সৌদি আরবে অবস্থান করছিলেন। তিনি হজ পালনের উদ্দেশ্যে গত ৪ আগস্ট সৌদি যান, এখন পর্যন্ত দেশে ফেরেননি। মামলা ও আসামির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে বিস্ময়কর এসব তথ্য জানা গেছে।
মামলাটি করেছে চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। মামলার এজহারে বলা হয়েছে, গত ৫ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির এক মামলায় কারাবন্দি খালেদা জিয়ার বিচার শুরু হয় নাজিমুদ্দিন রোডের পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে।
এ বিচারকে বাধাগ্রস্ত ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে ওই দিন সকালে কারা ফটকের অদূরে বেচারাম দেউড়ি আজগরি মঞ্জিলের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হন। তাদের বিক্ষোভে পুলিশ বাধা দিলে ইটপাটকেল ছোড়েন দলটির নেতাকর্মীরা। এতে মামলার বাদী এসআই কামাল উদ্দিনসহ দুজন আহত হন। এ সময় হামলাকারীদের আটক করতে গেলে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা পালিয়ে যান।
এ মামলায় ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা (প্রয়াত) আব্দুল আজিজুল্লাহ, চাঁন মিয়াসহ ৩৭ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই দিন বেচারাম দেউড়ি আজগরি মঞ্জিলের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের কোনো ঘটনাই ঘটেইনি। পুলিশের এমন মামলা একেবারেই হাস্যকর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রয়াত আজিজুল্লাহর বড় মেয়ে আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘পুলিশের এ ধরনের মিথ্যে মামলা খুবই দুঃখজনক।’
আর চাঁন মিয়ার ছেলে সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘মিথ্যে মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। অথচ ঘটনার সময় আমার বাবা দেশেই ছিলেন না।’
তবে মামলার এজাহারে মৃত ও বিদেশে অবস্থান করা কারো নাম নেই বলে দাবি করেন মামলার বাদী চকবাজার মডেল থানার এসআই কামাল উদ্দিন।
এ বিষয়ে চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীমুর রশীদ তালুকদারের ভাষ্য, ‘পলিটিক্যাল মামলাগুলো এ রকমই হয়ে থাকে। মামলা ৩০-৪০ জন আসামির সবাইকে যাচাই সম্ভব হয় না। তাদের মধ্যে কেউ মারা গেলে বা বিদেশে থাকলে তদন্তে তাদের নাম বাদ পড়বে। বিষয়টা আমরা তদন্তের সময় দেখব।’