রাজধানীতে লেগুনা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। রাজধানীজুড়ে চলছে ট্রাফিকের বিশেষ মোবাইল কোর্ট। মামলার ভয়ে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে অনেক মালিক। এতে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছে রাজধানীবাসি। রয়েছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ।
মঙ্গলবার ডিএমপি কামিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া সংবাদ সম্মেলনে জানান, রাজধানীতে লেগুনা চলাচলে কোনো অনুমতি নেই। তাই শহরে এই গাড়ি চলতে দেয়া যাবে না। এর আগে লেগুনা চলাচলের রুটগুলোতে পুলিশের সদস্যরা অবস্থান নেয়। ফলে সকাল থেকেই বন্ধ হয়ে যায় লেগুনা চলাচল। কিন্তু যাত্রী চলাচলের জন্য রাখা হয়নি বিকল্প ব্যবস্থা। বাধ্য হয়ে তাদেরকে রিক্সা বা পিকআপভ্যানে বাড়তি ভাড়া গুণে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। অনেকে আবার পায়ে হেটেই গন্তব্যে পৌছায়। এতে ক্ষোভ দেখা গেছে জনমনে।
এদিকে ফিটনেস বিহীন ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চেক করার জন্য রাজধানীতে চলছে ট্রাফিক বিভাগের বিশেষ মোবাইল কোর্ট। এতে রাজধানীর মূল সড়কগুলোতে গণপরিবহনের সংখ্যা কমে যায়। এছাড়া যেসব গাড়ী চলছে তাও গেটলক করে চলে যাচ্ছে ফলে ভোগান্তি আরো চরমে পৌঁছায়। বাসস্ট্যান্ডগুলোতে গাড়ীর জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধ ৩ রাস্তার মোড় থেকে ঢাকা উদ্যান পর্যন্ত লেগুনায় ভাড়া ছিল ৫ টাকা। অথচ ভ্যান গাড়িতে ভাড়া নিচ্ছে ১০ টাকা। বেড়িবাঁধ থেকে গাবতলি রুটে ১০ টাকার বিপরীতে ২০ টাকা নিচ্ছে পিকআপ ভ্যান।
এক যাত্রী জানান, তিনি সবসময় লেগুনায় যাওয়া আসা করেন। কিন্তু এখন লেগুনা বন্ধ। আবার বাসের সঙ্কটও প্রকট। তাই বাধ্য হয়ে তিনি পিকআপ ভ্যানে যাচ্ছেন।
তেঁজগাও কলেজের এক ছাত্র জানায়, তিনি দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাচ্ছেন না। আবার যেগুলো পাচ্ছেন সেগুলোতে যাত্রী ঠাসা। ভাড়াও দ্বিগুণ। তা ছাড়া গণপরিবহনগুলোও গেট বন্ধ করে যাচ্ছে। তার প্রশ্ন, এই সমস্যার সমাধান করবে কে? অবৈধ এবং অনিরাপদ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতেই হবে। কিন্তু আগে বিকল্প ঠিক করে তা করতে হবে। নইলে ভোগান্তি কমবে না।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিএরটিএর) হিসাব অনুযায়ী ঢাকা মহানগরীতে অনুমোদিত লেগুনার সংখ্যা ২ হাজার ৫২৫টি। যদিও বাস্তবে তা আরও বেশি। রাজধানীর নিউ মার্কেট থেকে পুরান ঢাকার বিভিন্ন গন্তব্য, নিউমার্কেট থেকে ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর থেকে মিরপুর, মোহাম্মদপুর থেকে মহাখালী, মিরপুর থেকে মহাখালী, গুলিস্তান থেকে মুগদা, বাসাবো, খিলগাঁও, রামপুরা থেকে গুলিস্তান, প্রভৃতি এলাকায় লেগুনায় চলাচলের যাত্রী অনেক বেশি।