গণমাধ্যম ডেস্ক: কোটা প্রথার সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ ও গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
শনিবার (১৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে সুজন।
সুজন জানায়, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুইজন শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার প্রতিবাদে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ন্যায়বিচার চেয়ে এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে সড়কে নেমে আসে। সড়কে নেমে তারা দেখিয়েছে কীভাবে সড়ক ব্যবস্থা সচল রাখতে হয়। বিশেষ করে লেন ধরে গাড়ি চলা, ইমার্জেন্সি লেন জরুরি সেবার জন্যে ফাঁকা রাখা- সড়ক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয় শিক্ষার্থীরা নতুন করে আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। এর আগে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে।
সুজন আরও জানায়, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ওই দুটি আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে সহিংস ঘটনা ও উসকানির অভিযোগে দায়ের হওয়া ৫২টি মামলায় ৯৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে (১৮ আগস্ট ২০১৮)। এর ফলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে নিদারুণ শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ। পক্ষান্তরে আন্দোলন দমনের নামে যারা পুলিশের পাশে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং যারা গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর আক্রমণ করেছিল তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
‘সুজন’ মনে করে, কোটা প্রথার সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন পরিচালনা করেছিল তা ছিল যৌক্তিক আন্দোলন। জনসমর্থনের ভিত্তিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কোটা প্রথার সংস্কার চেয়েছে, ন্যায়বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবি জানিয়েছে-তা কি কোনো অপরাধ হতে পারে? আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক দেশে এমন আন্দোলন পরিচালনা করা কোনো অপরাধ হতে পারে না। তাছাড়া আমাদের আইন ও সংবিধান যেখানে নাগরিকের অবাধ চলাফেরা, শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হওয়া, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা তথা বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছে সেখানে বর্তমানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যেভাবে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা ‘সুজন’-এর পক্ষ থেকে গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।