জন্মের প্রথম ৫ বছর শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় শিশু অতিক্রম করে বিকাশের মূল স্তরগুলো, যা ভবিষ্যৎ বৃদ্ধির সোপান। কাজেই বাবা-মা বা শিশুর যতœকারী যদি এ সময়ের স্বাভাবিক বৃদ্ধি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন, তা হলে যেমন শিশুর পূর্ণাঙ্গ মানসিক ও শারীরিক বিকাশ নিশ্চিত হবে, তেমনি যে কোনো প্রতিবন্ধকতা নির্ণয় ও চিকিৎসা দান করা সহজ হবে। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হলেÑ
ঝুঁকিপূর্ণ শিশু : কিছু শিশুর প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি অন্যান্য শিশু থেকে বেশি। যেমনÑ অপূর্ণ বয়সে জন্ম নেওয়া শিশু, অপুষ্ট শিশু, যেসব শিশু জন্মের সময় সংকটাপন্ন থাকে। যেমনÑ দেরি করে কাঁদে, জন্মের প্রথম মাসে খিঁচুনি, ইনফেকশন (সেপসিস), মস্তিষ্কের প্রদাহ (মেনিনজাইটিস), জন্ডিস ইত্যাদি। শিশু পেটে থাকা অবস্থায় মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ইনফেকশন, উচ্চ তাপমাত্রা ইত্যাদি। পূর্ববর্তী শিশু প্রতিবন্ধী হলে।
ঝুঁকিপূর্ণ বোঝার উপায় : খুুব সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখেই বোঝা যায় শিশুটি ঝুকিপূর্ণ। যেমনÑ শিশু যদি শব্দ শুনে চমকে না ওঠে, ঘুরে না তাকায়; আলো বা উজ্জ্বল জিনিসে সংবেদনশীল না হয়; যথাসময়ে কথা না বলে। অর্থাৎ এক বছর বয়সে কোনো শব্দ না করে, দেড় বছর বয়সে অর্থবোধক শব্দ উচ্চারণ না করে, ২ বছর বয়সে ২ শব্দের বাক্য গঠন না করে। যদি শিশু ৬ মাসে না বসে, আঠারো মাসে হাঁটতে না শেখে। ৬ মাস বয়সে হাত বাড়িয়ে খেলনা না ধরে, ১ বছরে সূক্ষ্ম জিনিস, যেমনÑ মুড়ি ইত্যাদি আঙুল দিয়ে ধরতে না পারে। সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে না খেলে অথবা অস্বাভাবিক আচরণ করে। শিশুর খিঁচুনি হলে
বিশেষায়িত চিকিৎসা : প্রাথমিকভাবে শিশুকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞর শরণাপন্ন হতে হবে। তিনি শিশুর পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা করে চিকিৎসার পরিকল্পনা করবেন। সাধারণভাবে শিশুদের দেড় মাস ( ৪৫ দিন), ৩ মাস, ৬ মাস, ৯ মাস এবং ১ বছর বয়সে ফলোআপ করা হয়। এ সময় তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ যথাযথ হচ্ছে কিনা, তা দেখা হয়। এ ক্ষেত্রে কিছু জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য শিশু নিউরোলজি বিশেষজ্ঞের সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে। বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রয়েছে চিকিৎসক, থেরাপিস্ট, মনোবিজ্ঞানী, বিশেষ শিক্ষক এবং অন্যদের নিয়ে সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থা।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, শিশু নিউরোলজি বিভাগ, ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিসওর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি
সূত্র : আমাদের সময়