চীনের কাছ থেকে চট্টগ্রাম-কুনমিং হাইওয়ের প্রস্তাব পাওয়ায় ভারতকে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত আমাদের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী। আমরা ভুলিনি, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সহযোগিতার কথা। ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের পর তারা আমাদের পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছিল। ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সংসদে পাস করাতে দেশটির সব দলের সংসদ সদস্যরা সমর্থন দিয়েছেন। সুতরাং ভারতের চিন্তার কিছু নেই।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এইটিনের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন কানেক্টিভিটির। আর সে স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ভারতও চীনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ প্রকল্পের অংশ হওয়ার কথা ভেবে দেখতে পারে।
ভারত যে চীনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ মহাপরিকল্পনার অংশ নয় তা উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমটির পক্ষে জাকা জ্যাকব প্রশ্ন করেছেন: আমরা জানি চট্টগ্রাম-কুনমিং হাইওয়েসহ বিশাল বড় বড় প্রকল্প তৈরির প্রস্তাব আছে বাংলাদেশ-চীনের। চীনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ পরিকল্পনার বিষয়ে থাকা ভারতের দুশ্চিন্তা কমাতে আপনি কী বলে ভারতকে আশ্বস্ত করবেন?
শেখ হাসিনা: বিশ্ব এখন ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ হয়ে গেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কানেক্টিভিটির দরকার। এটা খুবই জরুরি। চীন, ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ইতোমধ্যে কানেক্টিভিটির বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে; বিসিআইএমের ইকোনোমিক করিডোর। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে যাওয়ার পর আমি মনে করি না ভারতের দুশ্চিন্তার আর কোনও কারণ থাকতে পারে।
বরং আমার মনে হয় এতে ব্যাবসা বাণিজ্য বাড়বে। এতে বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার সবাই লাভবান হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কানেক্টিভিটি জরুরি। যদি কোনও বিষয় নিয়ে শঙ্কা থাকে তাহলে ভারত দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সেগুলোর সমাধানে উদ্যোগী হতে পারে। ভারত ও চীন উভয়েই আমাদের প্রতিবেশী।
ভারত আমাদের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী। আমরা ভুলিনি, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সহযোগিতার কথা। তারপর ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের পর তারা আমাদের পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছে।
আমরা ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি করেছি। চুক্তিটি সংসদে পাস করাতে ভারতের সব দলের সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ৬৮ বছর পর আমরা ছিটমহল সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। বিশ্বের বহু দেশ ছিটমহল বিনিময় করতে গিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। অথচ এখানে আমরা সেটি করেছি উৎসবমুখর পরিবেশে।
ভারতের মতো এতো বড় দেশ, এতো বড় যার অর্থনীতিতার উচিত না (চীনের ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড প্রকল্প নিয়ে) চিন্তিত হওয়া। বরং অর্থনৈতিক স্বার্থে ভারত এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।