বাচ্চার দু’সপ্তাহের বেশি সর্দি-কাশি ?
যক্ষ্মা নয়, ওই শিশু সিস্টক ফাইব্রসিস আক্রান্ত হতে পারে। প্রবল সম্ভাবনা থাকে ওই শিশুর অকালে ঝরে পড়ার। এই বিপদ ঠেকাতে জিনঘটিত এই রোগ দ্রুত চিহ্নিত করা জরুরি। এমনটাই দাবি করছেন মার্কিন গবেষকরা। একই মত রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশের। তবে এ দেশে সিসটিক ফাইব্রসিস নিয়ে সচেতনতা তলানিতে হওয়ায় সকলেই চিন্তিত। যদিও গবেষকরা একইসঙ্গে অন্য এক আশার কথাও শুনিয়েছেন।
গবেষকদের দাবি, সিস্টিক ফাইব্রসিস থাকা শিশুদের জন্মগতভাবে যক্ষ্মার মতো মারণ রোগের জীবাণু ঠেকানো রক্ষাকবচ থাকে। শুধু ঠেকানোই নয়, আজীবন অন্য জীবাণুর সংক্রমণ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। তবে, এর জন্য অল্প বয়সেই রোগটি চিহ্নিত করা সবচেয়ে জরুরি। এতে ওই শিশুর আয়ুও বাড়ে।
চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, দেখা গিয়েছে এই বিশেষ যক্ষ্মা প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকে ছোটবেলায় যাদের সিস্টিক ফাইব্রসিস নামে এটা জিনঘটিত রোগ শরীরে থাবা বসিয়েছে।ভারতে এ নিয়ে সচেতনতা খুব কম। ছোটবেলায় এটা চিহ্নিত করতে ছোট্ট একটা পরীক্ষার দরকার।
কলকাতার একটি মাত্র হাসপাতালে এই রোগ নির্ণয় সম্ভব। শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাস প্রসূণ গিরি জানান, ওই রোগে আক্রান্ত শিশুদের একটানা প্রবল কাশি আর বুকে সর্দির সমস্যা থাকে। ঘাম পরীক্ষা করে জানা যায় রোগের উপস্থিতি। ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হচ্ছে। যদিও ভারতে খুব এ নিয়ে এখন তেমন নিবিড় গবেষণা হয়নি বলেই অভিমত চিকিৎসকদের।
কেন হয় এটা?
পেঞ্চালা স্বামী মিট্টাডোডলা যিনি বর্তমানে ইউ এস এ- তে আরকানসাস-এর মার্সি হসপিট্যালের আইসিসি ডিরেক্টর বলছেন এটা একটা বিশেষ জেনেটিক মিউটেশনের জন্য হয়। শরীরে তখন সিসটিক ফাইব্রসিস প্রোটিন তৈরি হয়। তাঁদের থেকে বিশেষ রাসায়নিক নির্গত হয়ে শরীরে থাকা যক্ষ্মা জীবাণু নিষ্ক্রিয় করে দেয়। ফলে জিনঘটিত এই রোগের জন্য ঘুরপথে আরেক সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। দ্রুত রোগ নির্ণয় হলে চিকিৎসা শুরু করে আয়ু বাড়ানো যায়।
তবে, তাঁর সতর্কবার্তা হল শরীরে হাই ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক বা ডায়াবিটিস আক্রান্ত হলে ওই রক্ষা বর্ম দুর্বল হয়ে যায়। সাম্প্রতিক এক প্রসূতির ক্ষেত্রে এমনই ঘটনা নজরে আসে। এক জার্নালে তা প্রকাশ করেছেন এই ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ। কলকাতার বিশিষ্ট ফুসফুস বিশেষজ্ঞ রঞ্জন দাস বলেন, শিশুদের জন্মের পর পরই পরীক্ষা করে রোগে উপস্থিতি চিহ্নিত করলে আয়ু বাড়ে। পরীক্ষা কলকাতা শুধুমাত্র অল্প কিছু জায়গায় হয়। তাঁর মতে এই গবেষণা যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে পথ দেখাবে।