রাজধানীর হাতিরঝিলের পানি দুর্গন্ধমুক্ত করতে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সমন্বিত প্রকল্প হাতে নিয়েছে ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ (রাজউক)। ‘হাতিরঝিল লেকের দূষিত পানি পরিশোধন’ শীর্ষক এই প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই হাতির ঝিলের পানি দুর্গন্ধমুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে। সূত্র : বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
জানা যায়, প্রকল্পটি গ্রহণের আগে হাতির ঝিল লেকের বিভিন্ন স্থানের পানির নমুনা সংগ্রহ করে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, হাতিরঝিলের পানি বর্তমানে অগ্রহণযোগ্য পর্যায়ে দূষিত ও জলজ উদ্ভিদ-প্রাণীর জন্য সম্পূর্ণরূপে অনুপযোগী। এই পানি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
রাজউক কর্তৃক গৃহীত সমন্বিত প্রকল্পের আওতায় রয়েছেÑ পরিশোধন প্রক্রিয়ার যথাযথ ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন, উচ্চক্ষমতার কম্প্রেশার স্থাপন, লেকের তলদেশে প্রতিনিয়ত বায়ু সঞ্চালন ব্যবস্থা করা, পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে উন্নীতকরণ, ওয়্যারহাউজ স্থাপন, পন্টুন বোটের সাহায্যে পানিতে ওষুধ স্প্রে করা। একইসঙ্গে হোটেল সোনারগাঁওয়ের পেছনের অংশে লেকের পানি দূষণের প্রধান উৎস বন্ধ করা হবে। পান্থপথ বক্স কালভার্ট থেকে আসা বর্জ্য পুরো লেকে ছড়াতে না দিয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পাম্পের সাহায্যে অপসারণ করা হবে। এছাড়া বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে পানির গুণগত মান উন্নয়ন করা হবে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র হয়ে ওঠা হাতিরঝিলের পানি বর্তমানে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধে লেকের পানিতে বোটিং কিংবা পাশ দিয়ে হেঁটে বেড়ানো দুষ্কর হয়ে উঠেছে। জানা যায়, হাতিরঝিল লেকটি একটি ‘স্টর্ম ওয়াটার রিটেনশন বেসিন’ হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু লেকের নালা এরিয়ায় স্টর্ম ও স্যুয়ারেজ লাইন আলাদা নয়। ফলে বেশিরভাগ সময় পয়ঃবর্জ্য মিশ্রিত পানি হাতিরঝিল লেকে পড়ছে। এছাড়া নালা এলাকাগুলো থেকে কারখানার বর্জ্যও পড়ছে। বর্ষাকালে অতিবৃষ্টির সময় লেকের নালা খুলে দেওয়া হয়। ফলে পয়ঃবর্জ্য সরাসরি ঝিলের লেকে পড়ে। ফলে দৃষ্টিনন্দন লেকটি খুব দ্রুত দূষিত হয়ে পড়েছে।