সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের বক্তব্যের কারণে ২১ অগাস্ট মামলায় ‘ফরমায়েশি’ রায়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি।
২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলার বিচার প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই মামলায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও আসামি।
সম্প্রতি হামলার বার্ষিকীতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে হত্যাচেষ্টার জন্য বিএনপি নেতৃত্বকে দায়ী করেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেন, “সেপ্টেম্বরে রায় হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। এ কথা শুনে বিএনপি চিন্তিত। কারণ রায় বের হলে তারা নতুন করে সঙ্কটে পড়বে।”
রিজভী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের সাহেবরা একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে প্রভাবিত করতেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে বেসামাল বক্তব্য রাখছেন।
“ওবায়দুল কাদের সাহেব গতকাল বলেছেন, রায় হলে সংকটে পড়বে বিএনপি এবং আগামী সেপ্টেম্বরে সেই রায় হবে। কী করে জানলেন তিনি? তিনি তো সরকারের লোক মন্ত্রী। এটা তো আদালতের বিষয়। এটাই গভীর সন্দেহের বিষয়।”
গ্রেনেড হামলার এই ঘটনায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের ‘অনুগত’ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দকে দিয়ে সম্পূরক চার্জশিট প্রদান, মুফতি হান্নানকে ৪১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া, ঘটনার পর এফবিআইকে আওয়ামী লীগের সহায়তা না করা, শেখ হাসিনাকে বহনকারী গাড়িটি তদন্তকারীদের দেখতে না দেওয়ার পেছনে ‘অনেক গভীর রহস্য লুকানো’ আছে।
রিজভী বলেন, “২০০৮ সালের ১১ জুন বর্তমান আইজিপি ও তৎকালীন সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা চালায় হরকাতুল জিহাদ, মুফতি হান্নানই পরিকল্পনাকারী, মওলানা তাজউদ্দিন গ্রেনেড সরবারহকারী, হামলার পরিকল্পনা হয় ১৯ আগস্ট।
“জাবেদ পাটোয়ারীর তদন্ত প্রতিবেদনে কোথাও জনাব তারেক রহমান বা বিএনপির নাম নেই। তাহলে নিজেদের আইজিপির প্রতিবেদনকেও অগ্রাহ্য করা দুরভিসন্ধিমূলক।”
সরকারকে হুঁশিয়ার করে রিজভী বলেন, “মানুষের ক্ষোভের ধাক্কায় আসন্ন পতনের ভয়ে সরকারের বুকে ধড়ফাড়ানি শুরু হয়েছে বলেই উদ্ভট বক্তব্য রাখছে।
“কিন্তু যতই ষড়যন্ত্র ও মহাপরিকল্পনা করেন না কেন ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনাদের পতন ঠেকানো যাবে না। আপনাদের পতনের ভূমিকম্প শুরু হয়েছে।”
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন জয়নুল আবদিন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, খায়রুল কবির খোকন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করিম শাহীন।
সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার লক্ষীপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসীন আলী বাড়িতে এবং ছাত্র দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মামুনুর রশীদ মামুনের নোয়াখালীর চাটখিলের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি, ভাংচুরের নিন্দা জানানো হয়।
নোয়াখালীর বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন বকশী, দেওয়ান শামসুল আরেফিন শামীম, কাজল হোসেন ও রবিন শেখ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক এম এ হান্নান, ঢাকার দোহার উপজেলা সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তারের নিন্দাও জানান রিজভী।
– বিডি নিউজ