সরকার তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য আট হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করায় এ নিয়ে অসন্তোষের কোনো ‘সুযোগ’ দেখছেন না শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
তবে কিছু সংগঠনের ‘উদ্দেশ্য ভালো নয়’ মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা খুবই কেয়ারফুল, উদ্দেশ্যমূলকভাবে যদি কিছু করতে চায় তবে তারা কিছু করতে পারবে না।”
আট হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রদিবাদের মধ্যেই রোববার সচিবালয়ে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে বিএসআরএম-এর লভ্যাংশ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন চুন্নু।
পোশাক শ্রমিকদের মজুরি ৫১ শতাংশ বাড়িয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ন্যূনতম ৮ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা করে সরকার, যা আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ৫ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি পাচ্ছিলেন পোশাক শ্রমিকরা। এবার তা ১৬ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়ে আসছিল বিভিন্ন সংগঠন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে ন্যূনতম মজুরিকে কেন্দ্র করে কোনো অসেন্তোষ সৃষ্টির আশঙ্কা আছে কি না- সেই প্রশ্নে চুন্নু বলেন, “ন্যূনতম মজুরি ডিক্লেয়ার করার আগে আমি আনঅফিসিয়ালি শ্রমিক, শ্রমিক ফেডারেশন, ইউনিয়ন অনেকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারাও বলেছেন, যদি আট হাজার টাকা হয়, তাহলে হয়ত সবাই সেটা গ্রহণ করবে।
“আমার ধারণা কিছু সামান্য সংখ্যক ছাড়া, বেশিরভাগ গার্মেন্ট শ্রমিক এটা মেনে নেবেন এবং কোনো অস্থিরতা হওয়ার সুযোগ নেই, কারণ মজুরি ৫১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ভালো কাজ করলে কেউ না কেউ বিরোধী তো থাকেনই। এক লাখ টাকা বেতন দিলেও কেউ কেউ বলবেন এতে হয় না, আরও লাগবে।’
প্রস্তাবিত ন্যূনতম মজুরি নিয়ে কিছু শ্রমিক সংগঠনের আপত্তির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কে মানবেন, কে মানবেন না সেটা উনাদের বিষয়। তবে এটা মিনিমাম, এর নিচে বেতন দেওয়া যাবে না।”
তিনি বলেন, “বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পোশাক শ্রমিক মালিকরা অবকাঠামো উন্নয়ন করেছেন। এতে মালিকদের শত শত কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কারখানা কমপ্লায়েন্ট করার পরও ক্রেতারা দাম কমিয়েছেন। তারা একদিকে কমপ্লায়েন্সের জন্য চাপ দেয়, আবার দামও কমিয়ে দেয়। তারা আসলে দ্বিমুখী আচরণ করে, এটা ঠিক না।”
শ্রমিকদের বেতন আরও বাড়িয়ে দিতে গেলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী চুন্নু।
তিনি বলেন, “এতে শ্রমিকরা চাকরি হারাবে। যেসব সংগঠন এগুলো (ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান) বলছে, তারা আসলে কতটুকু শ্রমিক দরদী আর কতটুকু অন্য উদ্দেশ্য তাদের, সেটা আমার কাছে প্রশ্ন?”
– বিডিনিউজ