গণমাধ্যম ডেস্ক: দেশের অন্যতম রপ্তানিজাত পণ্য কাঁচা চামড়ার বাজার নিয়ে কারসাজি চলছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় রপ্তানিতে ধস নেমেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। অথচ সারা বছর প্রতি বর্গফুট কাঁচা চামড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বছর কোরবানি আসলে সিন্ডিকেট করে নানা অজুহাত তুলে কাঁচা চামড়ার দরে ধস নামানো হচ্ছে। এতে কোরবানি দাতারা চামড়ার ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। এবারো কোরবানির চামড়ার দরপতন নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছেন তারা।
গত ২০১৩ সাল থেকে কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধস নামতে শুরু করে। সেই বছর প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম ছিল ৮০-৮৫ টাকা। এরপর থেকে প্রতিবছর কাঁচা চামড়ার দরপতন অব্যাহত থাকে। এই বছর ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, খাসি ১৮-২০ টাকা ও বকরির চামড়া ১৩-১৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের কাঁচা চামড়ার বড় বাজার চীন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ডিউটি ইস্যু নিয়ে চীনের সাথে সৃষ্ট সমস্যায় চীনের বাজারে বাংলাদেশি কাঁচা চামড়ার চাহিদা কমে গেছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। দেশের ট্যানারিগুলোতে এটিপিযুক্ত না হওয়ায় বিদেশিরা অন্য দেশ থেকে চামড়া আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অনেকেই অভিযোগ করছেন।
চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চামড়ার গুণগত মান নিয়ে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের মদিনা ট্যানারির মালিক আবু মোহাম্মদ ইত্তেফাককে বলেন, ‘যেসব দেশে আমাদের চামড়া রপ্তানি হতো তারা তো ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেয়নি। তারা অন্য দেশ থেকে চামড়া সংগ্রহ করছে। বাংলাদেশের ট্যানারিগুলোতে এটিপি না থাকা নিয়ে ব্যাপক প্রচার হয়েছে। আমাদের ট্যানারিগুলোতে অবশ্যই এটিপি যুক্ত করতে হবে।’
দেশের চামড়া শিল্পকে রক্ষার জন্য প্রতি বছর সরকারি ভাবে ট্যানারি মালিকদের ব্যাংক ঋণের সুবিধা প্রদান করা হয়। এবার কয়েক শত কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ প্রদান করা হবে। অনেকের অভিযোগ ব্যাংক ঋণের টাকা যথাযথভাবে ব্যবহার করেন না ঋণ গ্রহীতারা। তারা এসব টাকা অন্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করে থাকেন এমন অভিযোগ পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীদের। সূত্র জানায়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় চট্টগ্রামের আড়তদার চামড়া ব্যবসায়ীদের এখনো ঢাকার অনেক ট্যানারির কাছে গত বছরের টাকা বকেয়া রয়েছে।